নিজস্ব প্রতিবেদক :: বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকার স্থান দ্বিতীয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পরই ঢাকার অবস্থান। বসবাসের জন্যে সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে খারাপের তালিকা প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা ই আইইউ।
ঢাকার নাম নিচের দিক থেকে দ্ইু নম্বরে উঠে আসার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বসবাসের ২য় অযোগ্য শহর হিসেবে ঘোষণা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও অনেক। এ বিষয়ে নাগরিক ঢাকার সভাপতি এম নাঈম হোসেন বলেন, ব্যাপারটি জনগনকে ভাবিয়ে তুলেছে। এর আঙ্গিক দুটি। এক. এই ধরনের কোন প্রকাশনায় সচেতন নাগরিক হিসেবে কি ধরনের অভিমত পোষণ প্রয়োজন আর দুই. এই ধরনের প্রকাশনার ভিত্তি।
প্রথমটির বিষয়ে যদি বলি। বর্তমান সময় ডিজিটাল মিডিয়ার। প্রতিটি নাগরিকই একেকজন সাংবাদিক। কেননা সংবাদমাধ্যম যেমন প্রচারণা ছড়াতে পারে, ঠিক সেভাবে সাধারন জনগনও ফেসবুক, লিংকডইন, টুইটার এবং আরো অনেক টুলসের মাধ্যমে জনমত তৈরি করতে পারে। সেটি ছোট কিংবা বড় যাই হোক।
আর দ্বিতীয় বিষয় নিয়ে যদি বলি, এমন প্রকাশনার ভিত্তি কি সেটা নিখুঁতভাবে দেখা উচিত এবং কোন কোন বিভাগের ভিত্তিতে আসলে এই প্রকাশনা অথবা জরিপ তৈরি হয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠান তা তৈরি করেছে আর সেসব প্রতিষ্ঠানের মানদন্ড কেমন? সেগুলো বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। তবে দ্বিতীয় অযোগ্য শহর হিসেবে যেটি বলা হয়েছে সেটি খুবই ভুল বা ঠিক তা বলতে চাচ্ছি না। আমি মনে করি, এই ধরনের প্রকাশনা দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাই নিজেদের শহরের বিপক্ষে না গিয়ে বরং এটি বিশ্লেষণ করে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ভালোর দিকে যাওয়া যায়। সে বিষয়ে আরো বেশি চিন্তা করা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা শহরেও অনেক ভালো কিছু আছে। যা বিশ্বের অনেক শহরের থেকেও শ্রেষ্ঠ।
কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বিষয়টি নিয়ে এম নাঈম হোসেন বলেন, সঠিক উত্তর দিতে অবশ্যই অনেক গবেষণার প্রয়োজন। তারপরও যদি বলতে হয়, তাহলে প্রথমেই আসবে জনসংখ্যার ঘনবসতি। এই আকারের শহরে যে পরিমান মানুষ থাকার কথা ঢাকাতে তার তুলনায় অনেক গুণ বেশি মানুষের বসবাস। সেজন্য আমাদের শহরের যে অবকাঠামো আছে তার থেকে বেশি পরিমান ব্যবহার হচ্ছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। কারণ মানুষ কাজের জন্য, জীবিকার জন্য, কর্মক্ষেত্রের দিকে আসবেই এটা কখনোই থামানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রের বিকেন্দ্রীকরণ খুবই জরুরি। এ ছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা ট্রাফিক জ্যাম। এটি শহরকে স্থবির করে ফেলে। প্রতিটি কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। প্রতিবছর শুধু ট্রাফিক জ্যামের কারণে কোটি কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। তার চেয়েও বড় সমস্যা, ট্রাফিক জ্যাম প্রতিদিনের কর্মক্ষমতা কমে ফেলে। ট্রাফিক জ্যামের কারণ শুধুই গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি নয় আরো অনেক কিছুই জড়িত।
এম নাঈম হোসেন আরো বলেন, ঢাকা শহরের যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে প্রথমেই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে দেখা শুরু করতে হবে। আমরা যারা সাধারন জনগন, আমাদের সহনশীলতা অনেক বেশি। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে নৈরাশা অতিমাত্রায়। আমি উত্তরণের জন্য আমাদের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। শহরে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু তারপরও এই শহর আমাদেরই আবাসস্থল। আমাদের রুটি, রুজি সবই এখানে। তাহলে প্রথমেই যেটা মনোভাবে আনতে হবে তা হচ্ছে, ঢাকার সমস্যাগুলো নিজেদের সমস্যা। এই সমস্যা বড় করে না দেখে সমাধানের জন্য পদক্ষেপে নিতে হবে। সবাই মিলে যদি মনোভাব পরিবর্তন পারি তাহলে সমস্যার সমাধান সেখান থেকেই শুরু হবে। এ ছাড়াও একটি র্দীঘমেয়াদী পরিকল্পনাও জরুরি। আমি আগেও বলেছি, কোন অলৌকিক ঘটনা দিয়ে রাতারাতি সমস্যার সমাধান হবে না। দুই দশকের কৌশলগত পরিকল্পনা দাঁড়া করানো দরকার। যার টেকসই বাস্তবায়ণের মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে।
সাধারন নাগরিকদের সতর্ক থাকা দরকার বলে মনে করেন তিনি জানান, আমরা সাধারন নাগরিক আসলে কি চাই! আমাদের চাহিদা শুধু ভাল থাকা। মৌলিক যে সব চাহিদা আছে যেমন শান্তিতে জীবিকা নির্বাহ, পরিবার নিয়ে কোন ঝামেলায় না পরা, পরিবহন সমস্যাতে না ভোগা, বিদ্যুৎ বিভ্রাট কম হওয়া, সিকিউরিটি ইস্যুতে নিরাপদ অনুভব করা ইত্যাদি। তদুপরি বলতে চাই, বর্তমান সময় ডিজিটাল যুগ। অবশ্যই কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। আমি আগেও বলেছি ডিজিটাল মিডিয়াতে আমরা নিজেরাই সাংবাদিক। সেজন্য খুবই সতর্কতার সঙ্গে বুঝেশুনে সংবাদ প্রদান করতে হবে। ডিজিটাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট প্রাণপ্রিয় শহরের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে। আবার একটি ভাল পোস্ট ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে পারে। সুতরাং আমাদের শহর সম্বন্ধে কথা বলার বা কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাওয়ার আগে অনেক বেশি সতর্কতার সঙ্গে সব বিষয় তলিয়ে দেখা দরকার। সতর্কতার সঙ্গে ইতিবাচক ডিজিটাল পোস্টই হওয়া উচিত আমাদের একমাত্র মানসিকতা।
(বিডি প্রেস রিলিস/২৫ আগস্ট ২০১৮/এসএম)
Posted on ডিসেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on ডিসেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ২৬th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ২৬th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪