মুহাম্মদ ফিরোজ আলম :: বেশ কয়েক বছর আগে একটি বিয়ের দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। একটি কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে গাছের ছায়ায় চেয়ার পেতে অতিথিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে কিছু মধ্যবয়সী পুরুষ নানা বিষয়ে গল্প করছিলেন।
একজন ভদ্রলোক তার টাক মাথার অল্পকিছু চুলের সাথে সাথে পুরোটা কালো রং করে এসেছিলেন। সেই রং টপটপ করে গায়ের জামায় পড়ছে। যেন এক জিবন্ত ক্যানভাস। একটুপর একটি ছোট মেয়ে এসে ভদ্রলোকের হাতে একটি গোলাপ ফুল রাখতে বলে চলে গেল।
মেয়েটি সম্ভবত তার কন্যা ছিল। লোকটি ফুলটি দু’তিনবার শুকেই দূরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গল্পে মশগুল হয়ে গেলেন। আমিও আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মনোযোগ দেয়ায় কিছুক্ষণ আর লোকটিকে লক্ষ্য করিনি।
হঠাৎ খেয়াল করলাম লোকটি মহা উৎসাহে জুতো খুলে পায়ের নখ খুটছে আর নখের ভেতর থেকে পাওয়া গুপ্তধন পরম আনন্দে গুকে দেখছে। আহা গোলাপের গন্ধ তাকে মোহিত করতে না পারলেও পায়ের নখের নিচে লুকোনো গুপ্তধনের গন্ধ তৃপ্তি দিচ্ছিল।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। ঢাকা বিশ্বের বাস অযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। নিশ্চিত করেই লজ্জিত হবার মত অর্জন। আমি যথেষ্ট লজ্জিত ও অপমানিত। এই অবস্থার জন্য নিশ্চয়ই আমরা সবাই দায়ি।
ঢাকাকে সুন্দর বাসযোগ্য করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সামান্য কিছু ট্যাক্স দেয়া ছাড়া আর কি করেছি সেটা ভাবতে ভাবতেই ফেসবুকে অনেকের ট্রল দেখলাম। বিশ্বাস করুন এই বাস অযোগ্য শহরটাকেই ১০ দিনের বেশি ছেড়ে থাকতে পারি না।
আমার মত অনেকের কাছেই এই শহরটা প্রাণের শহর। অথচ অনেকেই ঢাকা তথা বাংলাদেশকে ছোট করে নানা রকম স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। দুঃখজনকভাবে তারাও এদেশেরই নাগরিক। এদের অনেকেই এদেশের রাজনৈতিক নেতাদের অপছন্দ করেন। সেই ক্ষোভ কেন যেন তারা বিশ্বদরবারে দেশকে হেয় করে মেটান।
দেশের অর্জনে এরা চুপ করে থাকেন আর মন্দ কিছু পেলে নিজেরাই বিশ্বব্যাপী প্রচারের দায়িত্ব নেন। কখনো যদি সামান্য ইস্যু ভেবে বিশ্বমিডিয়া নজর না দেয় তখন তারা প্ল্যাকার্ড হাতে সেসব মিডিয়ার অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে যান। ভাবখানা এমন এই যে ভাই দেখে যান আমার মায়ের শাড়ি উড়ে গেছে ক্যামেরা কই?
আরে ভাই এত ভালোবাসা থাকলে আগে এসে মেয়ের আঁচল ঠিক করে দিন। মাকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে এরপর বিশ্বমিডিয়েকে ডেকে এনে বলুন, দেখো আমার মা কত সুন্দর। বাংলাদেশের অনেক অর্জন আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন নাকি খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করবেন সেটা আগে ঠিক করুন।
যদি আপনার সেই সময় না থাকে তাহলে দয়া করে চুপ থাকুন। গোলাপের সুবাস ফেলে পায়ের ময়লা শুকার অভ্যাসটা নিশ্চয়ই সম্মানজনক নয়।
(ফিরোজ আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)
লেখক :: ফিরোজ আলম, ফার্স্ট এডিশনাল ডিরেক্টর, ওয়ালটন গ্রুপ
(বিডি প্রেস রিলিস/১৬ আগস্ট ২০১৮/এসএম)
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৪th, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on সেপ্টেম্বর ৩rd, ২০২৪